শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৫৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
দীর্ঘ এক যুগ পর অফিস উদ্বোধন করল রংপুর মহানগর ছাত্রশিবির ৫ লক্ষ টাকার মেধা বৃত্তি দেওয়ার ঘোষনা করেন কিশোরকন্ঠ ফাউন্ডেশন,রংপুর। মহানবী (সা.) নিয়ে কটুক্তির প্রতিবাদে বেরোবিতে মানববন্ধন বেরোবিকে সেন্টার অব এক্সিলেন্স হিসেবে গড়ে তোলা হবে: উপাচার্য বেরোবিতে বিভিন্ন প্রশাসনিক দায়িত্বে ৫ শিক্ষক ভারতে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-কে নিয়ে কটুক্তির প্রতিবাদে রংপুরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চন্দনপাট ইউনিয়ন শাখা আয়োজিত সিরাতুন্নবী সাঃ অনুষ্ঠিত। অনিয়ম ও দূর্নীতি রুখতে খেলার মাঠ দেয়ার প্রস্তাব;পাগলপীর স্কুল গভর্নিং বডির ফের পাঠদানে ফিরছে বেরোবি, জানাগেল তারিখ  সদর উপজেলায় জামাতের সিরাতুন্নবী (সা.) অনুষ্ঠিত

ঝুঁকি নিয়েই কাল উঠছে লকডাউন

  • প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ১০ আগস্ট, ২০২১

অনলাইন ডেস্ক

 

করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও টানা লকডাউনের কারণে বিরক্ত হচ্ছিল বেশির ভাগ মানুষ। উপার্জন বন্ধ বা কমে যাওয়ায় সংসার চালাতে বিপদের মুখে ছিল ‘দিন এনে দিন খাওয়া’ লোকজন।    ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল দেশের অর্থনীতি। এ কারণে সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে—এ শর্তে প্রায় সব কিছু খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে এতে করোনা পরিস্থিতি কোন দিকে যায় তা নিয়ে গভীর উদ্বেগে আছে সরকার। আগামী সাত থেকে ১০ দিন গভীর পর্যবেক্ষণে থাকবে সরকার। যদি বড় ধরনের অবনতি হয় তাহলে আবারও লকডাউনের মধ্যেই সমাধান খোঁজার প্রয়োজন হতে পারে। আর যদি পরিস্থিতি এমনই থাকে, তাহলে স্বাস্থ্যবিধি মানা অর্থাৎ মাস্ক ব্যবহার ও গণটিকা দিয়ে অবস্থার উন্নতির চিন্তা করছে সরকার।

করোনার দ্বিতীয় দফা ঢেউ আঘাত হানলে গত এপ্রিল মাসের শুরু থেকে আজ ১০ আগস্ট পর্যন্ত ঈদকেন্দ্রিক সাত দিন বাদে পুরো সময়ই দেশে বিভিন্ন মাত্রার বিধি-নিষেধ বা লকডাউন চালু ছিল। দ্বিতীয় ঢেউয়ের শুরুর দিকে কম মাত্রার সংক্রমণ ও মৃত্যুতেও বেশি মাত্রার লকডাউন চালু ছিল। এবার সর্বোচ্চ মাত্রার সংক্রমণ ও মৃত্যুর মধ্যেই সব কিছু খুলে দিচ্ছে সরকার। এ অবস্থায় দেশকে বহুমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। কিন্তু কতটা প্রস্তুতি সব ক্ষেত্রে আছে, তা নিয়ে সংশয় আছে। সরকারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সরকারের জন্য লকডাউন থাকলেও চ্যালেঞ্জ, না থাকলেও চ্যালেঞ্জ।

গত ৪০ দিনের মধ্যে ৩৩ দিনই সর্বোচ্চ মাত্রার বিধি-নিষেধ বা লকডাউন চালু ছিল। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে মৃত্যু ও সংক্রমণে বারবার নতুন রেকর্ড হয়েছে। এরই মধ্যে আজ মঙ্গলবার শেষ হচ্ছে কঠোর লকডাউনের পর্ব। দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখা এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় চলমান কঠোর বিধি-নিষেধ তুলে নিচ্ছে সরকার। কাল বুধবার থেকে স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তে সব সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত, শপিং মল ও গণপরিবহনসহ প্রায় সবই খুলে দেওয়া হচ্ছে। তবে বন্ধ থাকবে সব ধরনের পর্যটন, বিনোদনকেন্দ্র ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

আজ শেষ হচ্ছে কড়া লকডাউন : গত ২৩ জুলাই থেকে শুরু হওয়া টানা ১৪ দিনের কঠোর লকডাউন বাড়িয়ে মোট ১৯ দিন করা হয়। এরই মধ্যে শিল্প-কলকারখানা খোলার জন্য লকডাউন দুই দফা শিথিল করা হয়। ২৩ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত লকডাউনের বিধি-নিষেধ ভঙ্গ করার দায়ে গ্রেপ্তার হয় ছয় হাজার ৪৩৯ জন। অনেককে জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা করা হয়েছে অনেক ব্যক্তিগত গাড়িকে। দূরপাল্লার যানবাহন বন্ধ থাকায় ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে যাত্রীদের। সড়ক-মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কগুলোতে বাস ছাড়া অন্যান্য যানবাহনে বহুগুণ বেশি ভাড়ায় যাতায়াত করছে মানুষ। রাজধানীতে প্রথম দিকে লকডাউন কঠোরভাবে পালিত হলেও ধীরে ধীরে ঢিলেঢালা হয়ে পড়ে। প্রথম দিকে পুলিশ কঠোর অবস্থানে থাকলেও চার-পাঁচ দিন ধরে তাদের মধ্যে শিথিলভাব লক্ষ করা  গেছে।

যা আছে প্রজ্ঞাপনে : গত রবিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব রেজাউল ইসলামের সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সকল সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি অফিস, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা থাকবে। আদালতের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবেন। সড়ক, রেল ও নৌপথে আসনসংখ্যার সমপরিমাণ যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে পারবে। প্রজ্ঞাপনে আরো বলা হয়, সড়কপথে গণপরিবহন চলাচলের ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন অর্থাৎ সিটি করপোরেশন এলাকায় বিভাগীয় কমিশনার এবং জেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসক নিজ নিজ এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী, সংশ্লিষ্ট দপ্তর-সংস্থা মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিদিন মোট পরিবহনসংখ্যার অর্ধেক চালু করতে পারবে। শপিং মল ও দোকানপাট সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা রাখা যাবে। সব ধরনের শিল্প-কলকাখানা চালু থাকবে। খাবারের দোকান, হোটেল-রেস্তোরাঁ অর্ধেক আসন খালি রেখে সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। সব ক্ষেত্রে মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে হবে এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রণীত স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।

চালানো যাবে শতভাগ পরিবহনও! : সর্বশেষ জারি করা প্রজ্ঞাপনে গণপরিবহন সম্পর্কিত সিদ্ধান্তটি নিয়ে বেশ সমালোচনা হচ্ছে। প্রজ্ঞাপনে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনাক্রমে অর্ধেক বাস চালানোর কথা বলা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত যৌক্তিক হয়নি বলে সমালোচনা করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। অন্যদিকে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের পক্ষ থেকেও বলা হচ্ছে, অর্ধেক বাস পরিচালনার সিদ্ধান্ত কার্যকর করা কঠিন হবে। এই বিষয়ে জানতে চাইলে গতকাল মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে করা সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদসচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘করোনাভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে আন্ত জেলা বাস চলাচল কমাতেই গণপরিবহনের ক্ষেত্রে অর্ধেক গাড়ি রাস্তায় নামানোর শর্ত দেওয়া হয়েছে।’ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অর্ধেক গাড়ি কিভাবে চলাচল করবে তা স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা আলোচনা করে ঠিক করে নেবে।’

এদিকে কভিড মোকাবেলায় সরকার গঠিত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, ‘প্রথমত সবাইকে মনে রাখতে হবে, আমরা কিন্তু এখনো ঝুঁকির মধ্যেই আছি। সরকার বাস্তবতার কারণেই কঠোর বিধি-নিষেধ অনেকটাই তুলে দিচ্ছে। কিন্তু পুরোটা তুলছে না। তাই এখন অবশ্যই প্রশাসনের জায়গা থেকে আরো দায়িত্বশীলভাবেই মানুষের মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে জোর দিতে হবে। পরিবহন থেকে শুরু করে সব জায়গায়ই নজরদারি রাখতে হবে জোরালোভাবে। স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে কঠোর থাকতে হবে। সামাজিক অনুষ্ঠান-সমাবেশ বন্ধ রাখা ও মসজিদে স্বাস্থ্যবিধি জোরদার করতে হবে। তিনি বলেন, সবাইকে টিকা দিতে হবে। টিকার ক্ষেত্রে আরো শৃঙ্খলা ও স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় নজর দিতে হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সম্পর্কিত সংবাদ
© ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | রংপুর নিউজ ৩৬৫
ডিজাইন ও কারিগরী সহায়তায় আতিক