শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
ফের পাঠদানে ফিরছে বেরোবি, জানাগেল তারিখ  সদর উপজেলায় জামাতের সিরাতুন্নবী (সা.) অনুষ্ঠিত নতুন উপাচার্য পেল রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দ রংপুর সদর উপজেলার সাংবাদিকদের নিয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। উলিপুরের হাতিয়ায় জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে সিরাতুন্নবী (সাঃ) উপলক্ষে বিশাল সাধারণ সভা রাধাকৃষ্ণপুর ডিগ্রী মহাবিদ্যালয়ের লেকচারার দেলোয়ার হোসেন মেয়াদউত্তীর্ণ কমিটির ভুয়া নিয়োগ নিয়ে দীর্ঘ ৯ বছর কলেজ পরিচালনা। ‘স্বৈরাচারী সরকার হেফাজতের ৩ শীর্ষ নেতাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে’ গুলিবিদ্ধ শাহিনের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করেন ছাত্রশিবিরের গাইবান্ধা জেলা শাখা কুড়িগ্রামে চার শহীদ পরিবারের মাঝে জামায়াতের ৮ লক্ষ টাকা বিতরণ। তানযীমুল উম্মাহ হিফয মাদরাসার বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা

রংপুরের মিঠাপুকুরে বিএমডিএ’র আওতায় নদী খননের ইজারা নিয়ে বালু ও মাটির ব্যবসা

  • প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

খন্দকার রাকিবুল ইসলাম,নিজস্ব প্রতিনিধি 

 

রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার শালমারা নদীতে নদী পুনঃখননের কাজ চলছে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আওতায়।ভূউপরিস্থ পানির সর্বোত্তম ব্যবহার ও বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে রংপুর জেলায় সেচ সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় শালমারা নদী পুনঃখনন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নদী পুনঃখননের পর নদীর অভ্যন্তরের বালু ও মাটি দিয়ে নদীর পাড় বাধাই করার পর বর্তমানে লক্ষ টাকার বালু বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে।এলাকাবাসীর অভিযোগ নদীর উচ্ছিষ্ট মাটি ও বালু দিয়ে নদী পাশের খাল-ডোবা ভরাট করার কথা থাকলেও ইজারাদার ডালিম পুকুর ও নিচু জমি ভরাট করার নামে বালু বিক্রির ব্যবসা করছে।

শালমারা নদীর পায়রাবন্দ ইউনিয়নের শিংগিকুড়া ও শালমারা লতিবপুর অংশে গিয়ে দেখা যায় বেশ কয়েকটি ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের মাধ্যমে নদী পুনঃখননের কাজ চলছে।মেশিন গুলোর নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা শরিফুল ইসলাম জানান উচ্ছিষ্ট বালুগুলোর মাধ্যমে সাধারন জনগণের খাল ও ডোবা বিনামূল্যে ভরাট করে দেয়া হচ্ছে।বালু ও মাটি বিক্রির অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে অস্বীকার করেন তিনি।

এলাকাবাসীর অভিযোগ আবুলের ঘাট সংলগ্ন রাস্তার দুইপাশে দুইটি জমি ভরাট করার নামে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে ইজারাদার ডালিম।এবিষয়ে একটি জমির মালিক কাটারামদরগার বাসিন্দা কৃষক রেজাউলের সঙ্গে কথা বললে তিনি অর্থের বিনিময়ে নিচু জমি ভরাট করে নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করলেও কি পরিমান অর্থ দিয়ে জমি ভরাটের কাজ করিয়ে নিয়েছেন তা বলতে অস্বীকৃতি জানান।অপর জমির মালিক একই গ্রামের রশিদুল দাবি অনুযায়ী অর্থ দিতে না পারায়, তার বিনিময়ে জমির মালিকের একটি গরু নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ইজারাদার ডালিমের বিরুদ্ধে।এ বিষয়ে ভুক্তভোগী রশিদুলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।

আবুলের ঘাট সংলগ্ন সিংগিকুড়া গ্রামে একটি বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় নদী থেকে বালু উত্তোলন করে পুকুর ভরাটের কাজ চলছে।উক্ত পুকুরের মালিক সালেহা বেগম জানান ৪৫০০০ টাকার বিনিময়ে পুকুর ভরাটের চুক্তি হয়েছে ইজারাদার ডালিমের সঙ্গে।বাজার তুলনায় অনেক কম টাকায় পুকুর ভরাটের কাজ শুরু হওয়ায় তিনি অনেক খুশি।মিডিয়া কর্মী পরিচয় পেলে তার কথা প্রকাশ না করার অনুরোধ জানান তিনি।

শালমারা নদী সংলগ্ন পার্শ্ববর্তী বড়াইপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায় মুদি দোকানি চন্দনের দশ শতকের একটি পুকুর ভরাটের কাজ শুরু করার প্রস্তুতি চলছে।দোকানদারিতে ব্যস্ত চন্দনের মা’র সঙ্গে কথা বলে জানা যায় তার দশ শতকের পুকুর ভরাটের জন্য ১২০,০০০ টাকা কন্টাক হয়েছে ইজারাদারের সঙ্গে।হাতের কাছে এত সহজে জমি ভরাটের কাজ কন্টাকের সুযোগ পাওয়ায় হাতছাড়া করেননি তার ছেলে।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এলাকাবাসী জানান পায়রাবন্দ ইউপির সদস্য ছালাম মেম্বারের যোগসাজশে নদী খননের অন্তরালে এ অবৈধ বালু ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে ইজারাদার ডালিম।কিন্তু এ বিষয়ে সাক্ষ্য দিতে কেউই রাজি হয়নি ও কোন প্রমান পাওয়া যায়নি।

নদী ড্রেজিংয়ের অন্তরালে অবৈধ বালু ব্যবসার বিষয়ে ইজারাদার মোস্তাক আলী খন্দকার ডালিমকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, এটি গুজব।ছালাম মেম্বারের দুইটি মেশিন ভাড়া নিয়ে ড্রেজিংয়ের কাজ করায় তার বিরোধী গ্রুপরা এগুজব ছড়াচ্ছে।তিনি আরো জানান অনেক ৪০০/৫০০ টাকার সাংবাদিক এসেছিলো আমি তাদের বুঝিয়ে দিয়েছি সবকিছু।আর আমি পুরো বাংলাদেশে কাজ করে বেড়াই।এর আগেও সাংবাদিকরা আমাকে নিয়ে অনেক লেখালেখি করছিলো।কিছুই করতে পারেনি।প্রতিবেদককে বলে আপনি এসে দেখে যান। যদি কেউ প্রমান দিতে পারে আমি টাকা নিয়েছি।তাহলে আমার যা হবার হবে।বালু মাটি বিক্রি ও গরু নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।

মিঠাপুকুর জোন বিএমডিএ সহকারী প্রকৌশলী শরিফুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,শালমারা নদীর পুনঃখননের কাজ মেসার্স ডালিম এন্টারপ্রাইজ কে দেয়া হয়েছে।নদী পুনঃখনন করে নদীর পাড় বাধাই করা হচ্ছে ও উচ্ছিষ্ট বালু দিয়ে পাশ্ববর্তী নিচু জমি ও নর্দমা ভরাট করে দেয়া হচ্ছে মানুষের চাহিদা অনুযায়ী।বালু ও মাটি বিক্রির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান কবরস্থান ও মানুষের চাহিদা মোতাবেক কাজ করতে গিয়ে ইজারাদারের বাড়তি খরছ হচ্ছে।সেজন্য ইজারাদার জমির মালিকের কাছে কিছু খরছ হয়তো নিতেছে।এসব বিষয়ে ইজারাদার ভালো জানেন।বালু ও মাটি বিক্রি হচ্ছে না বলেও তিনি জানান।

বিএমডিএ রংপুর সার্কেলের প্রকল্প পরিচালক হাবিবুর রহমান জানান,শালমারা নদী পুনঃখনন করে নদীর পাড় বাধাই করে তার মধ্যে বনায়ন করা হবে।নদীর বালু ও মাটি গুলো বিক্রি করা বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান এটি বেআইনি। এ বিষয়ের সত্যতা তার জানা নেই।এবিষয়ে তিনি তদন্ত করে দেখবেন বলে জানান।

সংবাদটি শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সম্পর্কিত সংবাদ
© ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | রংপুর নিউজ ৩৬৫
ডিজাইন ও কারিগরী সহায়তায় আতিক