সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই)। ২০১৯ সালের এই দিনে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে পালন করতে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে জাতীয় পার্টি।
এ উপলক্ষে জাতীয় পার্টির কাকরাইলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আজ সকাল ৮টায় হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের মিলনায়তনে হবে পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত। বিকেল ৩টায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করবেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের। সভায় জাতীয় পার্টির মহাসচিবসহ শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত থাকবেন। পরে দুস্থদের মধ্যে খাবার বিতরণ করা হবে।
মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও দলের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান এস এম ইয়াসির জানান, জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপ্রধান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকীর কর্মসূচিতে বৃহস্পতিবার সকালে রংপুর নগরীর সেন্ট্রাল রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, কালো ব্যাজ ধারণ, নগরীর দর্শনা মোড় পল্লী নিবাসে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদের সমাধিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মধ্যদিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন, ফাতিহা পাঠ, অসহায়-দুস্থদের মাঝে খাদ্যসহায়তা প্রদান এবং বিকেল সাড়ে ৪টায় দোয়া মাহফিল ও আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হবে।
এ ছাড়া দিনব্যাপী নগরীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে কোরআন তেলাওয়াত ও বাদ আছর বিভিন্ন মসজিদে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। জেলার প্রতিটি পৌরসভা, উপজেলা এবং ইউনিয়নপর্যায়ে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গাসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেকেই মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জন্ম ১৯৩০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি, বর্তমান ভারতের কোচবিহার জেলার দিনহাটায়। ১৯৪৬ সালে দিনহাটা স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাস করে তিনি রংপুর কারমাইকেল কলেজে ভর্তি হন। এ সময় তিনি কারমাইকেল কলেজ ছাত্রসংসদের সাহিত্য সম্পাদক নির্বাচিত হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এরশাদ। ১৯৭৮ সালের ১ ডিসেম্বর তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে নিয়োগ পান। ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ এরশাদ প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের পদ গ্রহণ করে দেশে সামরিক শাসন জারি করেন এবং দেশের সংবিধান স্থগিত করেন।
সামরিক শাসক থাকাকালে ১৮ দফা বাস্তবায়ন পরিষদ নামে অরাজনৈতিক খোলসে একটি রাজনৈতিক কর্মসূচি শুরু করেন। পরে ১৯৮৬ সালের ১ জানুয়ারি ‘জাতীয় পার্টি’ নামের রাজনৈতিক সংগঠন গঠন করে তিনি পার্টির চেয়ারম্যান হন এবং সেনা পোশাক ছেড়ে রাজনীতির কাতারে শামিল হন। ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর এরশাদ গণ-অভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির অভিযোগে ১৯৯১ সালে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। কারাগারে থেকেই তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। মুক্তি পান ছয় বছর পর ১৯৯৭ সালে।
Leave a Reply