নীলফামারি জেলার বাসিন্দা রশিদুল ইসলাম ও মোসলেমা বেগম দম্পতির ঘরে জন্ম নেয়া ফুটফুটে ছেলেসন্তান, যার বয়স মাত্র তিন (৩) দিন। নবজাতক এই শিশু পৃথিবীর আলো দেখার আগেই হারিয়ে গেলো তার মা-বাবার বুক থেকে। প্রথম সন্তানকে সড়ক দুর্ঘটনায় হারালেন পরিবার।
স্বাভাবিক ভাবেই প্রথম সন্তানের জন্ম পরিবারের জন্য নিয়ে আসে এক অনাবিল আনন্দের জোয়ার। সেই আনন্দের জোয়ার আজ বিষাদে পরিণত হয়ে গেলো।আজ রবিবার (১১ই সেপ্টেম্বর) ভোর আনুমানিক চারটার দিকে রংপুরের তারাগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় এই নবজাতকের মৃত্যু হয়। আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নবজাতকের মা–বাবা।
পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহত নবজাতকের পরিবার সূত্রে জানা যায়, অসুস্থ হয়ে পড়লে আজ ভোর আনুমানিক চারটার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে নবজাতককে নিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পথে রওনা হন তার মা–বাবা। রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের তারাগঞ্জ উপজেলার ইকরচালী হাজীপাড়ার খারুভাজ সেতুর কাছে অ্যাম্বুলেন্সের সঙ্গে সৈয়দপুরগামী ভাই ভাই ক্ল্যাসিক পরিবহনের বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে নবজাতকসহ অ্যাম্বুলেন্সে থাকা তিনজন নিহত হন। আহত হয়েছেন নবজাতকের মা–বাবাসহ চারজন। আহত ব্যক্তিরা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি।
অ্যাম্বুলেন্সের চালক নিহত আলামিন হোসেনের ভাই নুরুজ্জামান বিলাপ করে বলেন, ‘আমার ভাইয়ের জায়গা–জমি বা অর্থ-সম্পদ কিছু নেই। তার সংসারে রয়েছে ছোট দুটি বাচ্চা। গাড়ি চালিয়েই তিনি সংসার চালাচ্ছিলেন। এখন এই ছোট্ট ছোট্ট বাচ্চাগুলোর কী হবে! কীভাবে সংসার চলবে তাদের!’
হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ মাহাবুব মোরশেদ বলেন, কয়েক দিন আগেও দুর্ঘটনায় মহাসড়কের ওই স্থানে নয়জন প্রাণ হারিয়েছে। সেই শোক কাটিয়ে না উঠতেই আবার অন্য একটি দূর্ঘটনা, যা সত্যি খুবই মর্মান্তিক। দুমড়েমুচড়ে যাওয়া অ্যাম্বুলেন্স ও বাস পুলিশ ফাঁড়িতে এনে রাখা হয়েছে।
Leave a Reply