স্থানীয় প্রতিনিধি
জুবাইর জিহাদী
বালিকা বিদ্যালয় বলতে কন্যা শিশুরা পড়বে এটাই স্বাভাবিক। ব্যতিক্রম কুড়িগ্রামের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কুড়িগ্রাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। এখানে ছেলে মেয়ে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত এক সঙ্গে পড়ালেখা করে। ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে শুধু মেয়েরা।
এই ব্যতিক্রম বিদ্যালয় নিয়ে কৌতুহলের শেষ নেই। এ বিদ্যালয়ের ১২৫ বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এক বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্যে উদযাপিত হয়েছে শুক্র ও শনিবার (১০ ও ১১ই ফেব্রুয়ারী)। শনিবার ছিলো মুল আনুষ্ঠানিকতা।
দু’দিন ব্যাপী বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান ঘিরে পুরাতন-নতুন শিক্ষার্থী, শিক্ষক, বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটিসহ জেলার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। গোটা শহর ছিল উৎসব মুখর। রাস্তা চায়ের দোকান শপিংমল সর্বত্রই ছিলা জনসমাগম।
এসময় কুড়িগ্রামের সিনিয়র সিটিজেন ও জেলা দূর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি সামিউল হক নান্টু বলেন, “এ বিদ্যালয়ের এটাই বিউটি (সৌন্দর্য )। বালিকা বিদ্যালয় ছোট ছোট ভাই আসে পড়তে। এটা অন্য রকম বন্ধন। উপলব্ধি করা যায় বুঝানো যায় না”
কুড়িগ্রামের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কুড়িগ্রাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১২৫ বর্ষপূর্তির ২য় দিন শনিবার সকালে বিদ্যালয় প্রাঙ্গন থেকে প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন রঙ-বেরঙের সাজে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
র্যালী শেষে আনুষ্ঠানিক ভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ জাফর আলী (সাবেক সাংসদ)।
পরে শান্তির প্রতিক পায়রা উড়ানো এবং কেক কাটেন যথাযথভাবে স্থানীয় সংসদ সদস্য মোঃ পনির উদ্দিন আহমেদ এবং জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ জাফর আলী।
পরে দুপুরে বর্ষপূর্তি উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ প্রতিমা চৌধুরীর সভাপতিত্বে আমন্ত্রিত অতিথিরা বক্তব্য রাখেন। এসময় প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের স্মৃতি রামন, খাবার বিতরণ ও বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা হয়।
জানা যায়, ১৮৯৬ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টিতে অধ্যায়নরত বর্তমান ও জীবিত প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের উদ্যোগ কুড়িগ্রাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এর ১২৫ বর্ষপূর্তি উদযাপন কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটির আয়োজন আগামী ১০ ও ১১ ফেব্রুয়ারি দু’দিনব্যাপী বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান শহরে সাড়া ফেলে।
উক্ত অনুষ্ঠানে স্মৃতিকাতর হয়ে অধিকাংশরাই পরিবার নিয়ে আসেন। ফলে বাড়তি মানুষের চাপে শহর মুখরিত হয় উঠে।
প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এবং স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য মো. রজব আলী জানান,“বিদ্যালয়টি কুড়িগ্রাম জেলার ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান। বালিকা বিদ্যালয় নাম হলেও এখানে ছেলে-মেয়ে উভয়েই প্রাথমিক পর্যায় পড়তে পারে। আমরাও পড়েছি। এখানে জীবিতদের মধ্যে ১৯৪৭ সালের শিক্ষার্থীও রেজিস্ট্রেশন করেছেন। তাদের বয়সী থেকে পরবর্তী প্রজন্মের অনেকে তাদের স্মৃতি বিজরিত বিদ্যালয়ের বর্ষপূর্তিতে অংশ নেন”
Leave a Reply