প্রতিবেদকঃরিপন শাহরিয়ার,মিঠাপুকুর রংপুর
হেমন্ত মানেই যেন নবান্নের এক আনন্দ ও উৎসব মুখর আমেজ। গ্রাম বাংলার গৃহস্থ কৃষকেরা সোনালী নতুন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত। গৃহিণীরাও মগ্ন নতুন ধানের নানান রকম পিঠা-পুলি আর পায়েস বানাতে। শুরু হয়েছে নতুন ধানের তৈরি পিঠাপুলি খাওয়ার ধুমধাম আয়োজন।
কিন্তু যাদের জমি জমা নেই আবাদ নেই বর্গা চাষও করেন না তারা কি বাদ পড়বেন এই আয়োজন থেকে?
রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলায়ও চলছে ধান কাটা মাড়াইয়ের মহোৎসব। কৃষকের সদ্য কেটে নিয়ে নেওয়া ধানক্ষেতের ইঁদুরের গর্তে ইঁদুরেরা যে আপৎকালীন খাদ্য মজুদ রাখে সেই গর্তের ধান সংগ্রহ করতে বিস্তীর্ণ ক্ষেতে ক্ষেতে চষে বেড়াচ্ছেন দরিদ্র পরিবারের শিশু-কিশোরেরা। গ্রাম পর্যায়ে এমন দৃশ্য প্রতি মৌসুমের।
তাদেরও শখ তারাও শামিল হতে চান নবান্নের এই উৎসবে খেতে চান নতুন ধানের পিঠাপুলি ও পায়েস।
তাদেরই একজন শিশু সিয়াম স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ে সে । সিয়াম বলে “হামার ভুই (জমি) নাই সেজন্য হামরা ধান কুড়বে আলছি”
গর্ত থেকে ধান বের করার জন্য সরঞ্জাম হিসেবে নিয়েছেন কোদাল খুন্তি সাথে ধান রাখার পাত্র হিসেবে নিয়েছেন ব্যাগ। সব গর্তে ধান পায়না তারা। রয়েছে সাঁপে কাটার ঝুঁকিও। কারণ এসব ইঁদুরের গর্তেই সাঁপেদের বসবাস । তবুও অভাব আর শখের কাছে হার মানছে সকল ঝুঁকি আর ভয়।
এ বিষয়ে উপজেলার বড়বালা এলাকার কৃষক সেলিম মিয়া রংপুর নিউজ৩৬৫ কে বলেন, “আমরা ধান কাটার পর তারা (শিশুরা) জমিতে ধান কুড়াবার জন্য আসে আমরা বাধা দিই না কারণ একদিকে অপচয় রোধ হয় অন্যদিকে তারাও এক বেলা শখের পিঠাপুলি খেতে পারেন”
কৃষি মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুসারে, প্রতিবছর দেশে ইঁদুরের কারণে গড়ে ৫০০ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়।
আবার আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা কেন্দ্রের (ইরি) ২০১৩ সালের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, এশিয়ায় ইঁদুর বছরে যে পরিমাণ ধান-চাল খেয়ে নষ্ট করে, তা ১৮ কোটি মানুষের এক বছরের খাবারের সমান। আর শুধু বাংলাদেশে ইঁদুর ৫০ থেকে ৫৪ লাখ লোকের এক বছরের খাবার নষ্ট করে।
Leave a Reply